foru

বেক্সিমকোর ৪০০ কোটি টাকা ঋণের অনুরোধ

 

beximco-loan-request-400-crore

বেক্সিমকোর ৪০০ কোটি টাকা ঋণের অনুরোধ: কারখানা বন্ধ না করতে সরকারের প্রতি আবেদন

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো টেক্সটাইলস বর্তমানে একটি বড় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে ৪০০ কোটি টাকা সিসি (কারেন্ট ক্রেডিট) লোন সহায়তার আবেদন করেছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে এবং কারখানাগুলো কার্যক্রমে রাখতে সক্ষম হবে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, বেক্সিমকো টেক্সটাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কায়সার চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে তাদের রপ্তানিমুখী কারখানাগুলো বন্ধ না করার আবেদন করেছেন। তাদের দাবি, যদি প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা হারে মোট ৪০০ কোটি টাকা সিসি লোন সহায়তা দেওয়া হয়, তবে তারা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে পারবে এবং কারখানাগুলো সচল রাখতে সক্ষম হবে।


কর্মকর্তাদের দেনা-পাওনা পরিশোধের অনুরোধ

বেক্সিমকো টেক্সটাইলস জানিয়েছে, তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের মোট দেনা-পাওনা প্রায় ৫৫০-৬০০ কোটি টাকা। এই পরিমাণ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কর্মচারীদের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করতে চায়, যাতে কর্মচারীদের মধ্যে কোন ধরনের অস্থিরতা তৈরি না হয়। তারা সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে এই ঋণ সহায়তার মাধ্যমে তাদের কারখানাগুলো চালু রাখতে সাহায্য করা হয়।


ঋণ সহায়তা এবং ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা

বেক্সিমকো টেক্সটাইলসের এমডি তার চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন যে, সরকার এবং ঋণদাতা ব্যাংকগুলোর সহযোগিতায় ৪০০ কোটি টাকার সিসি লোন সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা চালু করা হলে, কারখানাগুলো আবারও পুরোদমে চালু রাখা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে, তারা সরকারের কাছ থেকে এই সুবিধাগুলি দ্রুত কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছে।


ভুল তথ্য ও গ্রুপটির অবস্থান

বেক্সিমকো গ্রুপ চিঠিতে আরও দাবি করেছে যে, তাদের বিরুদ্ধে যে ৪৫,০০০ কোটি টাকা ঋণের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা ভুল। প্রকৃত ঋণ পরিমাণ ২৮,০০০ কোটি টাকা, যা জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে বেক্সিমকো টেক্সটাইল ডিভিশন নেওয়া ঋণের পরিমাণ। বেক্সিমকো দাবি করছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ রপ্তানি করছে এবং গত ছয় বছরে গড়ে মাসিক ৩২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে। ২০২২ সালে এই পরিমাণ ছিল ৫৯ মিলিয়ন ডলার।


গ্রুপের ভবিষ্যত এবং সংকটের মুখে সহায়তা প্রয়োজন

বেক্সিমকো গ্রুপ তার চিঠিতে উল্লেখ করেছে, সরকার এবং ঋণদাতা ব্যাংকের সহযোগিতায় তারা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প পার্ক গড়ে তুলেছে, এবং তা এখন সংকটের মুখে রয়েছে। বেক্সিমকো আশা করছে, তাদের এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে এবং কারখানাগুলো সচল রাখতে সরকার ও ঋণদাতাদের সহায়তা প্রয়োজন।

এই সংকটের মধ্যে, বেক্সিমকো টেক্সটাইলস ৪৫,০০০ কর্মীকে কাজে নিয়োজিত রাখলেও বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৩৫,০০০-এ নেমে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, তাতে তারা সরকারের সহায়তায় আশা প্রকাশ করছে, যাতে তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং দেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান বজায় থাকে।

পরিশেষ

বেক্সিমকো গ্রুপের এই আবেদন দেশের বৃহৎ শিল্প খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে। সরকারের সহায়তা এবং ঋণ সহায়তা নিশ্চিত হলে বেক্সিমকো টেক্সটাইলস তাদের উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় সচল রাখতে সক্ষম হবে, যা দেশের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, সংকটের গভীরতা বিবেচনায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।




আরো পড়ুন
রমজানে কী খাবার খাওয়া উচিত? – স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা
গরমের দিনে যেসব ফল থাকা চাই আপনার খাদ্যতালিকায়
প্রতিদিন একটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে যেসব উপকার পাবেন

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.