foru

ঘুমের গুরুত্ব এবং প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত?

 

sleep with benefits

ঘুমের গুরুত্ব এবং প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত


ঘুম মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের পুনরুদ্ধার, মস্তিষ্কের কার্যক্রম এবং সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু, আপনি কি জানেন যে, কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত? এই প্রশ্নের উত্তর আপনার বয়স, জীবনযাত্রার ধরন এবং শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে।


১. শিশু এবং কিশোরদের ঘুমের প্রয়োজনীয়তা

শিশুদের শরীর দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং তাদের শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়ন ঘটে। এজন্য তাদের অধিক সময় ঘুমানো দরকার।


১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ১০-১৩ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। এই বয়সে ঘুম তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ এবং শরীরের বৃদ্ধিতে সহায়ক।


৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ৯-১১ ঘণ্টা ঘুম দরকার। স্কুল, পড়াশোনা, খেলা এবং অন্যান্য কার্যকলাপের জন্য এই সময়টা আদর্শ।


১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের জন্য ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম করা উচিত। এই বয়সে শরীর এবং মন দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, তাই পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন।


২. প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুমের পরিমাণ

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট। এই বয়সে ঘুমের গুরুত্ব আরও বেশি হয়ে উঠে, কারণ এটি শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ঘুমের অভাব মানসিক চাপ, অস্থিরতা, এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।


৩. বয়স্কদের জন্য ঘুমের পরিমাণ

৬৫ বছর বা তার উপরের বয়সীদের জন্য ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমের সুপারিশ করা হয়। বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে শরীরের চাহিদা পরিবর্তিত হয়, তবে পর্যাপ্ত ঘুম বয়সকালে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।


প্রতিদিন একটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে যেসব উপকার পাবেন


৪. ঘুমের অভাব এবং তার প্রভাব

ঘুমের অভাব শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মনোযোগের অভাব, মেমরি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, এবং এমনকি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। আরও, দীর্ঘকালীন ঘুমের অভাব মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, যেমন অবসাদ এবং উদ্বেগ।


৫. ঘুমের জন্য কিছু টিপস

নিয়মিত সময়: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন। এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি বা সার্কেডিয়ান রিদমের সাথে মিলিয়ে ঘুমের গুণগত মান বাড়াতে সাহায্য করবে।


স্বাস্থ্যকর পরিবেশ: ঘরটি শান্ত, অন্ধকার এবং ঠাণ্ডা রাখুন। ঘুমের পরিবেশ আরামদায়ক হলে ঘুম ভাল হয়।


ইলেকট্রনিক ডিভাইস: ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ব্লু লাইট মস্তিষ্কে ঘুমের সংকেত পাঠাতে বাধা দেয়।


শরীরচর্চা: নিয়মিত ব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে, তবে খুব কাছাকাছি সময়ে ব্যায়াম না করাই ভাল।


ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় ঘুম গ্রহণ করা জরুরি। আপনার বয়স এবং শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন এবং নিয়মিতভাবে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটা আপনার জীবনযাত্রাকে আরও সুস্থ এবং কার্যকরী করে তুলবে।


Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.