ভারতের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও চীনের উত্থান
এক সময় ভারতের শেয়ার বাজার বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল। তবে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব ভারতের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
** বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা ও পুঁজি প্রত্যাহার
শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি প্রত্যাহারের হার বাড়ছে, যার পেছনে রয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক কারণ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১৮ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এছাড়া ভূরাজনৈতিক বিভাজন বিনিয়োগের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে, যা উদীয়মান অর্থনীতির জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে।
** ট্রাম্পের নীতির প্রভাব
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা আরও সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যা এক ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে ভারতীয় বাজার থেকে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী তাদের অর্থ সরিয়ে নিচ্ছেন।
** চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণের কৌশল
অন্যদিকে, চীন নতুন বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, যা চীনের বাজারকে বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তুলনামূলকভাবে কম দামে শেয়ার কেনার সুযোগ থাকায় বিনিয়োগকারীরা ভারতের শেয়ার বিক্রি করে চীনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা, বিনিয়োগের নিম্নগতি এবং ভূরাজনৈতিক বিভাজনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি এবং চীনের বিনিয়োগবান্ধব কৌশল ভারতের বাজার থেকে পুঁজি প্রত্যাহারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক নীতি, যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।