![]() |
নরেন্দ্র মোদি : ফাইল ছবি। |
ভারতের রাজনীতিতে অভ্যুত্থানের শঙ্কা?
ভারতে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও তাদের আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মধ্যে সম্পর্ক গত এক দশকে কিছুটা শীতল হয়ে উঠেছিল। তবে সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রত্যাশিত ফল না পাওয়া এবং বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন, দুই সংগঠনকেই আবার কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। ভারতের বিশিষ্ট আরএসএস গবেষক দিলীপ দিওধর দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।
✅ আরএসএস-বিজেপি সম্পর্ক ও নতুন বাস্তবতা
ইকোনমিক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিওধরের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে এমন সময় যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সফর করেছেন এবং সেখানে আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
গবেষক দিলীপ দিওধর জানান, ‘‘গত ১১ বছরে বিজেপি ও আরএসএসের সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছিল। বিশেষত কর্ণাটক ও উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় এই দূরত্ব আরও বেড়ে যায়, যখন বিজেপি আরএসএসের পরামর্শ উপেক্ষা করে নিজস্ব কৌশলে এগিয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া এবং বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের ঘটনাগুলো দু’টি সংগঠনকে আবার কাছাকাছি এনেছে।’’
✅ বাংলাদেশের পরিবর্তনের প্রভাব
দিওধর বলেন, আরএসএস মনে করছে যে, বাংলাদেশে বিক্ষোভের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের ঘটনা ভারতের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘বাংলাদেশের পরিবর্তনের পর ভারতের বিরোধী দলগুলোর অনেক নেতা একই ধরনের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তাই আরএসএস ও বিজেপি উভয়েই উদ্বিগ্ন যে, বিদেশি শক্তির মদদপুষ্ট কিছু গোষ্ঠী ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারে।’’
✅ আরএসএস-বিজেপি সমন্বয়ের নতুন ধারা
আরএসএস গবেষকের মতে, ২০০০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী তার পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে আরএসএসের রেশিমবাগে গিয়েছিলেন, তবে তখনকার সংঘপ্রধান কেএস সুদর্শন তাকে নিরপেক্ষ দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছিলেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন; মোহন ভগবত নরেন্দ্র মোদিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।
রোববারের নাগপুর সফরে মোদির বক্তৃতার সময় ভগবতের মনোযোগপূর্ণ উপস্থিতি এই নতুন বাস্তবতাকেই ইঙ্গিত করে। মোদি যখন সংঘ ও ভারতের উন্নয়নে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করছিলেন, তখন আরএসএস প্রধানও তা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন।
✅ পরিপ্রেক্ষিত ও ভবিষ্যৎ
এই রাজনৈতিক সমীকরণ ভারতের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। বিশেষত বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনের আলোকে বিজেপি-আরএসএসের ঐক্য কতটা গভীর হয় এবং ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এর কী প্রভাব পড়ে, তা পর্যবেক্ষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস
আরো পড়ুন |
---|
অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার |
মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা |
ঘুমের গুরুত্ব এবং প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত? |